শিবলী নোমান

বুদ্ধিজীবী সংক্রান্ত থিসিস (২১-২৫)

শিবলী নোমান

 

২১.

ব্যক্তির অবস্থান বা মতামতের বিপরীতে অবস্থান নিতে গিয়ে ব্যক্তিকে আক্রমণ করে বসা একজন মেকি-বুদ্ধিজীবীর অন্যতম লক্ষণ।

 

২২.

একজন বুদ্ধিজীবীর অবস্থান আদতে আর সকল মানুষের চেয়ে উপরে। তবে এই উপরে অবস্থানের বিষয়টি পুরোপুরিই অর্জন করে নেয়ার বিষয়, জোর-জবরদস্তির নয়। আর একজন প্রকৃত বুদ্ধিজীবী মূলত তার এই অবস্থানকে প্রতিনিয়ত অস্বীকার করার লড়াইয়ে লিপ্ত থাকেন। উল্টোদিকে তার এই লড়াইটিই তাকে আরো উপরে নিয়ে যেতে থাকে। এই হিসেবে একজন বুদ্ধিজীবী আসলে সাধারণ মানুষের কাতারে অবস্থান করে না। আবার এ জন্যই সকল মানুষও বুদ্ধিজীবী হয়ে উঠতে পারে না।

 

২৩.

ক্রোধের আগুনে অনবরত পুড়ে পুড়েই একজন সম্ভাব্য বুদ্ধিজীবী প্রকৃত বুদ্ধিজীবী হওয়ার দিকে এগিয়ে যায়।

 

২৪.

কোন ঘটনা, বিষয় বা বস্তুকে নিজের মতো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ-সমালোচনা করতে পারার স্বাধীনতা একজন ব্যক্তির বুদ্ধিজীবী সত্ত্বার অস্তিত্বের জন্য সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। আর এই স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্যই এমন কোন পার্টি-ব্লক-সিন্ডিকেটে তার সদস্যপদ নেয়া উচিত হবে না, যেখানে বা যার ফলে তার এই স্বাধীনতা বিন্দুমাত্র খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

২৫.

বর্তমান কালের কথিত বুদ্ধিজীবীরা নিজেদের সন্তুষ্ট করে কপটতাপূর্ণ কনফারেন্স টেবিলের সভাপতি বা নিদেনপক্ষে বক্তা হয়ে। নিজ গণ্ডির ভেতর ছড়ি ঘুরিয়ে তারা সম্ভবত রতিসুখের অনুভূতি পান রতিক্রিয়া ব্যতিরেকেই। কিন্তু ভুলে গেলে চলে না যে, একজন প্রকৃত বুদ্ধিজীবী আদতে কখনো সন্তুষ্ট হতে পারে না। অন্যদিকে সুখী হওয়া তার জন্য প্রায় অসম্ভব।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।