শিবলী নোমান

মাইক্রোফিকশন (২৬-৩০)

শিবলী নোমান

 

২৬.

দাঁতের চিকিৎসার জন্য চেয়ারে শুয়ে ছিল সে, যখন ডাক্তার রোগীর চোখ বরাবর থাকা কাজে সহায়ক বাতিগুলো জ্বালিয়ে দিলো।

কিন্তু রোগীর মনে হলো বাতি না জ্বলে কেউ হেসে উঠলো যেন।

আতঙ্কে চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্য নড়তে শুরু করতেই দাঁতের চিকিৎসার নানা কাজে লাগা যন্ত্রগুলোর নল তাকে পেঁচিয়ে ধরলো আষ্টেপৃষ্ঠে।

ঠিক তখনই উপরের বাতিরূপী জান্তব কিছু একটা নিচু হয়ে এসে কামড়ে ধরলো রোগীটিকে।

 

২৭.

পাল বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ধর্মপালের বহু শততম তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিরা হঠাৎ খেয়াল করলেন, উল্টোপাশের হাটা পথ ধরে মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসছেন রাজা ধর্মপাল স্বয়ং।

 

২৮.

অবশেষে চোখ বন্ধ করে অনেকক্ষণ ধরে আসি আসি করেও না আসা হাঁচিটি দিতে পারলেন তিনি। হাঁচির ঝাঁঝ কেটে গেলে চোখ খুলে আবিষ্কার করলেন তার আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পরিণত হয়েছে পারমাণবিক বোমা পড়া এক ধ্বংসস্তূপে।

 

২৯.

অনেকক্ষণ ধরেই বিরক্তি লুকিয়ে রেখে খাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।

খাওয়ার পুরোটা সময় ধরে তার ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে একাধিক দাওয়াতি। সবারই উদ্দেশ্য উনার পর আসনটা নিজ দখলে নেয়া।

বিরক্তি ধরে রাখতে না পেরে হুট করেই উঠে পেছনে ফিরলেন তিনি।

হাতের নাগালে পাওয়া এক দাওয়াতিকে টেনে নিলেন ঘাড় ধরে আর তার মুখে এক টুকরো খাসির মাংস গুজে দিতে দিতে বলে উঠলেন, “খা হাভাইত্যা, খা!”

 

৩০.

– আজ থেকে পাঁচ বছর পর আপনারা নিজেদের কোথায় দেখতে চান?

– পাঁচ বছর পর নতুন যুগের মানুষ তৈরির এই কারখানা নিয়ে আমরা গর্ব ও অহংকার করার মতো একটি অবস্থানে যেতে চাই।

– কেন?

– কারণ অহংকার পতনের মূল।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।