শিবলী নোমান
পহেলা আগস্ট, ২০২৪। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালানোর ফলে তীব্রতর হওয়া আন্দোলন তখনো এক দফায় এসে ঠেকেনি। সেদিন বিকেলে চিকিৎসাজনিত কারণে ঢাকা যাওয়ার পথে জানতে পারলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বিভাগের সভাপতির কক্ষ থেকে সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলেছেন। একই সময়ে একজন শিক্ষার্থী মারফত এটিও জানতে পারি শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকে আমার রাজনৈতিক আদর্শের ব্যাপারে খোঁজ-খবর করা হচ্ছে। দুইটি বিষয় নিয়েই বিভাগের একজন শিক্ষকের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিলাম কার্ফ্যু শুরু হওয়ার আগেই আবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরে আসার চিন্তাসমেত। সেই শিক্ষকের সাথে যোগাযোগের আরেকটা কারণ ছিল একমাত্র তিনিই জানতেন আমি ক্যাম্পাস থেকে ঢাকায় কোথায়, কোন চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছি। নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁকে সব তথ্য দিয়ে এসেছিলাম। তবে কোন ধরনের সমস্যা ছাড়াই সেদিন ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছিলাম।
তেসরা আগস্ট সকালে ঘুম থেকে উঠেই সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘নীরবতার জবাব চাই’ শিরোনামে একটি বিবৃতি চোখে পড়লো। সেটি পড়ে জানলাম আরো অনেকের সাথে বিভাগের কতিপয় শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানার সভাপতির কক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে ফেলার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। খোঁজ করে জানতে পারলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সময়ের প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের দল ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’-এর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিও আগের রাতে কোন এক সময় প্রচারিত হয়েছে। মজার বিষয় হলো বিবৃতিতে স্বাক্ষর শুধুমাত্র আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের থাকলেও, উনাদের স্বাক্ষরের নিচে কোন এক অদ্ভুত কারণে প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নামও সেখানে জুড়ে দেয়া হয়েছে, উপরে ‘আহ্বায়ক কমিটির সদস্য’ শব্দত্রয় লিখে দিয়ে।
কিন্তু একদিকে যেমন আহ্বায়ক কমিটির সকলের নাম সেখানে নেই, অন্যদিকে আমার বিভাগের একজন শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানলাম তারা এই বিবৃতি বা এতে তাঁদের নাম দেয়ার ব্যাপারে কিছুই জানেন না। পরে শুনেছি আহ্বায়ক কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যের কাছে নাম দেয়ার ব্যাপারে জানতে চেয়ে নেতিবাচক মনোভাব পেয়ে বাকিদের সাথে কোন যোগাযোগ ও অনুমতির বালাই ছাড়াই এই কাজটি করা হয়েছিল। ঘুম থেকে উঠে এই দুইটি বিবৃতি দেখে প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের দলের ভেতরের গণতন্ত্রহীনতা নিয়ে নিচের লেখাটি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলাম প্রচণ্ড ক্ষোভ থেকে।
(ফেইসবুক আমার সব কাজ লিমিটেড করে রাখছে। জানি না এই পোস্ট আদৌ করা যাবে কিনা।)
জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষক রাজনীতিরে আমি ভিলেজ পলিটিক্স কইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
এইখানে একজন শিক্ষক নিয়োগ পাইলে তারে বাই ডিফল্ট প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের দলে তালিকাভুক্ত করা হয়, সম্মতি নেয়ার কোন বালাই ছাড়াই।
এইখানে বহু বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের কাছ থেকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রটোকল অফিসারের ভূমিকা দাবি করা হয়।
আমি জয়েন করার পর অন্য বিভাগের এক শিক্ষক কইছিলেন যারে বলা হইছে তারেই ভোট দিতে হবে। অন্য কোন সুযোগ নাই।
মোট কথা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যামনে চলে বুঝতে বুঝতে শিক্ষকদের নৈতিক অবস্থা দুর্বল কইরা ফেলার একটা শক্তিশালী সিস্টেম এইখানে বলবত থাকে।
…
কিন্তু একটু বেশি অজানা বিষয় হইলো এই ক্যাম্পাসে একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট আছে। তারা যা চায় মূলত তাই হয়ে থাকে, যে কোন বিষয়ে।
যেমন ধরেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রশাসনপন্থি প্যানেলের প্রার্থী কারা হবে, এইটা উনারা ঠিক করেন। পরে মতবিনিময় সভা নামক এক নাটক সাজানোর মাধ্যমে তাতে গণতান্ত্রিক রঙ দেয়া হয়। বিভিন্ন অনুষদের ডিন প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে, আদতে সব ক্ষেত্রেই।
…
এই সব কওয়ার কারণ হইলো, গতকাল আমার বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভাগের শিক্ষকদের নীরবতার জবাব চেয়েছেন। এই জবাব তারা চাইতেই পারেন, অন্তত গত ২০ দিনে তারা যা দেখছেন, তার সাথে যোগ হওয়া পুঞ্জিভূত ক্ষোভ যুক্ত হয়ে এটাই হওয়ার কথা। এতটা পরিণত তারা তাদের আগের সম্মিলিত জীবনকালে হয়তো আর হয়ে ওঠেন নাই।
আমি ভাবছিলাম যদি কখনো বিভাগে প্রকৃত অর্থেই ফেরা হয়, তখন শিক্ষার্থীদের সাথে এই বিষয়ে আড্ডা, আলাপ, আলোচনা করা যাবে। কিন্তু একটা বিষয়ে আসলে এখনই বলা প্রয়োজন মনে করি।
শিক্ষার্থীরা যেসব বিষয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তার ভেতর গতকাল প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের একটি বিবৃতির প্রসঙ্গ আছে। এই বিবৃতির শেষে উল্লিখিত শিক্ষকদের নামে বিভাগের শিক্ষকদের নাম দেখে তারা ক্ষুব্ধ। তা হওয়াও অন্যায্য নয়।
তবে, দুইটা বিষয় এখানে স্পষ্ট হওয়া উচিত বলে মনে করি।
প্রথমত, শিক্ষকদের যে নামের তালিকা এই বিবৃতিতে দেয়া হইছে, তার ঠিক উপরে লেখা ‘আহ্বায়ক কমিটির সদস্য’, অর্থাৎ এইটা এই দলের বর্তমান আহ্বায়ক কমটির সদস্যদের তালিকা, বিবৃতির সাথে একমত হয়ে তাতে স্বাক্ষর দেয়া শিক্ষকদের তালিকা না।
তার চেয়ে বড় কথা, আমি অন্তত চারজন শিক্ষক পেয়েছি, যাদের নাম এতে আছে। অথচ তারা এর ব্যাপারে তখনো জানেনই না। কিন্তু এদিকে তারা বিবৃতিতে স্বাক্ষর দিয়েছেন, এমন প্রচারে বিভিন্নভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
দ্বিতীয়ত, এই দলের ভেতর যে গণতন্ত্রহীনতার চর্চা, তারই অংশ হিসেবে পদস্থ ব্যক্তিরা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো এসব বিবৃতি প্রচার করেন। এর আগে কোন এক ইস্যুতে চার শতাধিক শিক্ষকের নামে তারা বিবৃতি প্রচার করেছিলেন। অথচ একটা বিবৃতিতে স্বাক্ষর দেয়ার জন্য বিবৃতির খসড়া কাউকে দেখান নাই, জানতেও চান নাই কারো নাম দিবে কি দিবে না।
তাইলে প্রশ্ন আসতে পারে, আহ্বায়ক কমিটির কেউ তাকে না জানায় বিবৃতিতে নাম দেয়ার বিষয়ে আপত্তি করছেন কিনা। বা এভাবে হুট করে একটা বিবৃতিতে আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন কিনা।
আমি সবার কথা জানি না। তবে এটুকু জানি, এই দলের সকল সদস্যদের নিয়ে যে ম্যাসেজিং গ্রুপটি আছে, গত ১৭ তারিখ থেকে তাতে অ্যাডমিন ছাড়া কেউ ম্যাসেজ দিতে পারছেন না।
…
এগুলা নিয়ে কথা বলতে ঘেন্না লাগে। কিন্তু শিক্ষক নেতাদের হঠকারী কাজের জন্য আমার একজন শিক্ষক, যার নৈতিক অবস্থান এবং শিক্ষার্থী ও বিভাগ নিয়ে ভাবনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু বাঘা বাঘা শিক্ষকদের চেয়ে ভালো, তিনি যখন বেহুদা নিন্দা-সমালোচনা-ক্ষোভের মুখে পড়েন, ছাত্র হিসেবে আমার এইটুকু বলতেই হয়।
কারণ আমার বাপ-মা সারাজীবন কইছেন, আমার জীবনে উনাদের ঠিক পরের অবস্থানটা আমার শিক্ষকদের।
…
নীরবতার জবাব চাওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি করা অন্য কোন বিষয়ে আমার দ্বিমত নাই, তারা যদি শিক্ষকদের জবাব দেয়ার ন্যায্য সুযোগ দেয় (অনলাইন-অফলাইন), আর যৌক্তিক জবাবসমূহ (যদি থাকে) যৌক্তিকভাবে মাইনা নেয়।
…
সবার মঙ্গল হোক!
২.
কিন্তু প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের দলের নেতাদের এহেন কাজ একেবারে নতুন কিছু ছিল না। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত সংবাদের সূত্রে জানতে পারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষক আসন্ন নির্বাচন ইস্যুতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। পাঁচ শতাধিক শিক্ষক কারা খোঁজ নেয়ার জন্য কয়েকটি সংবাদ পড়ে জানতে পারলাম প্রশাসনপন্থি শিক্ষকগণই বিবৃতিটি দিয়েছেন। মূল বিবৃতি পড়তে গিয়ে সেখানে নিজের নামও খুঁজে পেলাম। খুঁজে পেলাম শিক্ষা ছুটিতে দেশের বাইরে থাকা বিভাগের শিক্ষকদের নামও। এই ক্ষেত্রেও বিবৃতির খসড়া কাউকে দেখানো হয়েছে বলে শুনি নি, বিবৃতিতে নাম দিতে কেউ আগ্রহী বা সম্মত কিনা সে প্রশ্নও করা হয় নি। সে সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিককে কয়েকদিন ধরে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে নিজের হতে হয়েছিল বিব্রত, বিনিময়ে তারা হয়েছিলেন হতবাক।
৩.
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জাতীয় পেনশন স্কিমে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া লাগাতার কর্মবিরতির কোন কর্মসূচিতেই আমি যোগ দেই নি। তবে ১৫ জুলাই এ সংক্রান্ত শিক্ষক সমিতির জরুরি সভায় যোগ দিয়েছিলাম। তার ঠিক আগের দিন সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে তুই-তুকারি করেছিলেন, আর আন্দোলনকারীদের বলেছিলেন ‘রাজাকারের বাচ্চা’। শিক্ষক সমিতির সেদিনের সভা থেকে তার পরদিন মুখে কালো কাপড় বেঁধে শিক্ষকগণ প্রধানমন্ত্রীর এরূপ আচরণের প্রতিবাদ জানাবেন বলে ঠিক হয়। কিন্তু সেদিন সন্ধ্যায় প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের সেই নেতা তথা অধ্যাপক দলীয় গ্রুপে বার্তা দিয়ে শিক্ষক সমিতির পরদিনের কর্মসূচি যোগ না দেয়ার আহ্বান জানান এই বলে যে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
একই দিন সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর দফায় দফায় হামলা চালায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের আভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত সদস্যরা। মাঝরাতের পর পুলিশও শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে এবং ভোর হওয়ার আগ পর্যন্ত চলে তাদের টিয়ার শেলিং ও রবার বুলেট নিক্ষেপ। এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত ও অভূতপূর্ব ঘটনার পর আমি আমার এক বন্ধু-সহকর্মীকে জানাই পরদিন তথা ১৬ জুলাইয়ের শিক্ষক সমিতির আন্দোলন কর্মসূচিতে আমাদের যাওয়া উচিত, যেন ১৫ তারিখ দিবাগত রাতে শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তার প্রতিবাদ করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানাতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকগণও সেদিন একই অবস্থান নিয়েছিলেন এবং শিক্ষকগণ মুখে কালো কাপড় বেঁধে চলমান সিন্ডিকেট সভায় গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা না করার জন্য উপাচার্যের কাছে লিখিত দাবি জানিয়ে আসেন।
একই দিন রাতে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার জন্য সিন্ডিকেট সভা আহ্বানের প্রয়োজন হয়। ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় সেই সভা আহ্বান করা হয়। তবে সিন্ডিকেটের সদস্য না হয়েও সেই অধ্যাপক নেতা সকাল ৯টার পরপর দলীয় গ্রুপে বার্তা দিয়ে জানান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার জন্য সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। একই সময় তিনি প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদেরকে রেজিস্ট্রার ভবনে জড়ো হতে বলেন। অর্থাৎ সিন্ডিকেটের সদস্য না হয়েও তিনি সিন্ডিকেটের হতে যাওয়া সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিচ্ছিলেন সভা শুরুর আগেই। সেদিন দফায় দফায় উক্ত গ্রুপের বার্তাসমূহ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তিনি ঐ গ্রুপে সদস্যদের বার্তা দেয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেন।
৪.
প্রশাসনপন্থি এই শিক্ষক নেতা তথা অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হওয়ার জন্য এমন নগ্নভাবে দলীয় লেজুড়বৃত্তি করেছেন বলে প্রচার রয়েছে। নিজের ব্যক্তি স্বার্থোদ্ধার করতে গিয়ে তিনি পেশাদারিত্বের বোধ ও স্বাভাবিক সৌজন্যতা বিসর্জন দিয়েছিলেন বলেই তাঁর কর্মকান্ডে প্রতীয়মান হয়। মজার বিষয় হলো প্রশাসনপন্থি শিক্ষকদের সেই অধ্যাপক নেতার উল্লিখিত প্রতিটি কান্ড নিয়ে তখনও বহু শিক্ষক নিজেদের ভেতর সমালোচনা করেছিলেন, তার এ ধরনের কর্মকান্ড নিয়ে হাসাহাসিও হয়েছিল। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে সেসব সমালোচনা বা আপত্তি প্রকাশ না করার জন্য কখনো বিপদে পড়তে হবে, তা হয়তো ভাবেন নি কেউ। আবার যে বিবৃতিতে নাম দেয়ার জন্য কারো অনুমতি নেয়া হয় নি, সেই বিবৃতিতে নাম থাকার জন্য এখন দায়স্বিকার করতে হবে কিনা, হলেও তা কতটা যৌক্তিক, সেসব আলোচনাও অপ্রাসঙ্গিক নয়। অথচ, ঐ শিক্ষক নেতা এখন সবকিছু থেকে দূরে বসে আপাত নিরাপদ সময় কাটাচ্ছেন, কিন্তু যে সামাজিক অনিরাপত্তার মধ্যে তিনি তাঁর সহকর্মীদের রেখে গিয়েছেন, তা নিয়ে আদৌ তাঁর কোন অনুশোচনা আছে বা কোনদিন তৈরি হবে বলে মনে হয় না।