শিবলী নোমান

মাইক্রোফিকশন (৩১-৩৫)

শিবলী নোমান

 

৩১.

বাথরুমে ঢুকে দুই পা এগুতেই বাম পা পিছলে পড়ে গেলো লোকটা। কোমড় মাটিতে পড়তেই পিং পল বলের মতো এক লাফ দিয়ে তার শরীরটা হাই কমোডে ঢুকে অদৃশ্য হয়ে গেলো।

সেকেন্ড কয়েক পর ভেসে এলো এক তৃপ্তির ঢেকুড়ের শব্দ।

 

৩২.

কতিপয় জীবিত মানুষের প্ল্যানচেট খেলার ফলে দুনিয়ায় ফিরে এসেই ব্রিটিশ রাজা ১ম চার্লস ঘোষণা দিলেন তাঁর প্রথম অনুশাসনটি:

“এবার ধরে আনো জন মিলটনের আত্মাকে। কত বড় ধৃষ্টতা তার, অ্যারিওপেজিটিকা নামক বস্তপচা এক বক্তৃতায় সে লিখে রেখেছিল ‘দাও আমায় জানার স্বাধীনতা দাও, কথা কইবার স্বাধীনতা দাও’; যত্তসব বুলশিট!”

 

৩৩.

– বাহ্‌, তোমার আজকের বানানো চা তো খুব ভালো হয়েছে দেখছি, কীভাবে?

– গত সপ্তাহে আমার হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেয়ার সময় আপনি বলেছিলেন এই সনদ আমার জীবন বদলে দিবে, মনে আছে আপনার?

– তা মনে আছে, কিন্তু সে কথা কেন?

– সেই সার্টিফিকেট পোড়ানো আগুনেই চা বানিয়েছি।

 

৩৪.

– বাসা ভাড়া নিয়ে উঠে গিয়েছেন। বেশ বেশ! মূল গেটের বাইরে লেখা নিয়ম-কানুন দেখেছেন তো?

– জ্বি, রাত বারোটার পর নিচের গেট বন্ধ থাকবে, লেখা দেখেছি। এই শর্তে আমাদের কোন সমস্যা নেই। আর কোন বিষয় আছে কি?

– আছে, রাত বারোটার পর নিচের গেট বন্ধ তো থাকবেই, এছাড়া ওখানে এটি লেখা নেই যে, অন্যান্য সময়ও গেট খোলা হবে না। স্বাগতম!

 

৩৫.

– ফুরফুরে মেজাজে থাকাই আপনাকে এই বিষাদগ্রস্ততা থেকে বের করে আনতে পারবে। সারাদিন হাসির উপলক্ষ্য খুঁজবেন, আর জীবনের মজা লুটবেন, বুঝলেন?

– তা এত হাসির খোরাক পাবো কোথায়, তাও না হয় বলে দিন! আনন্দ খুঁজতে খুঁজতেই তো উল্টো হতাশ হয়ে পড়ি।

– আরে কী যে বলেন! সুযোগসন্ধানীদের লেখা বিবৃতি পড়বেন। উনারা প্রতিদিন একাধিক লিখেন ও প্রকাশ করেন। একটা পড়লে সারাদিন আর কিছু লাগবে না। বিফলে মূল্য ফেরত!

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।