শিবলী নোমান

মাইক্রোফিকশন (৩৬-৪০)

শিবলী নোমান

 

৩৬.

– ভাই, চেয়ারটা একটু ছেড়ে দেন, ভিআইপি গেস্ট এসেছে, একটু বসতে দেই।

– তা দেন, সমস্যা নেই। আরেকটা কথা, রিসিপশনে গিয়ে ৩৩ নম্বর নামে দুই হাজার টাকার ভাউচার দিয়েছিলাম, ওর ভেতর থেকে এক হাজার আমাকে একটু দিয়ে যান।

– ওমা! বিয়েতে উপহার দিয়ে কেউ আবার ফেরত নেয় নাকি!

–  গন্তব্য এক হলেও স্ট্যান্ডিং টিকেটের দাম কম, জানেনই তো!

 

৩৭.

মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠলো লোকটা।

আশেপাশে তাকাতেই আবিষ্কার করলো বিছানার সবদিক থেকে তার দিকে অস্ত্র তাক করে রেখেছে একদল সুসজ্জিত যোদ্ধা।

– আপনারা কারা?

– আমরা মেটা রিপাবলিকান ফোর্স। অনেকেই আপনার ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট করেছে। আমরা সে কারণেই এসেছি।

– আমার অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিক্ট করে দিলেই তো পারেন। এখানে, এভাবে কেন?

– কোন অ্যাকাউন্টে বিপুল সংখ্যক রিপোর্ট হলে এখন থেকে অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিকশন নয়, বরং অ্যাকাউন্টধারীকে রিমুভ করা হবে পৃথিবী থেকে। হা হা।

– এটা কি ইয়ার্কি হচ্ছে নাকি!

– মোটেই না। আপনিই প্রথম ব্যক্তি যাকে আমরা রিমুভ করতে যাচ্ছি৷ আপনি প্রস্তুত হয়ে নিন, কোন তাড়া নেই।

 

৩৮.

– গরুর মাংসটা কেমন লাগলো?

– ভালো, তবে খেতে যতটা না ভালো লেগেছে, তারচেয়ে খাওয়ার আগে দেখতে বেশি ভালো লাগছিল।

 

৩৯.

শুক্রবার সকালে বাবাকে বাজারের উদ্দেশে রওনা করিয়ে ভেতরের ঘরে যাচ্ছিলো খোকন। যাওয়ার পথে বসার ঘর থেকে ভেসে এলো বাবার কণ্ঠস্বর,

– এক গ্লাস পানি দিলি না তো, সেই কখন বললাম!

– আমি এখন বাজারের পথে আছি বাবা, ঘরে ফেরার পর দিতে পারবো।

 

৪০.

বাবা-মা মারা যাওয়ার পর প্রতি ঈদে বড় বোনকে সালাম করতে গেলেই বোন হাসতে হাসতে বলে, “সালাম করো আর না করো, কোন টাকা দিতে পারবো না।“

এ কথা শুনে ভাইও হাসিমুখে বলে ওঠে, “টাকা লাগবে না।“ তবে বাক্যটি সে শেষ করে মনে মনে, “বেঁচে থাকলেই চলবে।“

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।